কতটুকু লবন খেলে নিরাপদ থাকবে আপনার শরীর?

লবন ছাড়া খাবার মুখে তোলা কঠিন। কিন্তু ঠিক কতখানি লবন শরীরের জন্য ভালো? অতিরিক্ত লবন যেমন খাবারকে বিস্বাদ করে তোলে তেমনই ক্ষতি করে শরীরেও। উচ্চ রক্তচাপ, হার্টের সমস্যা, কিডনির সমস্যা-সহ নানা অসুখ লবনের হাত ধরেই বাসা বাঁধে শরীরে।
কিন্তু আমরা অনেকেই জানি না ঠিক কতখানি লবন আমাদের শরীরের জন্য প্রয়োজন। এক এক জন মানুষের ক্ষেত্রে এই পরিমাণ তাদের শারীরিক অবস্থা বুঝে এক এক রকম হয়।
তবে এক জন সুস্থ-স্বাভাবিক মানুষের শরীরে লবনের পরিমাণ ঠিক কতখানি হলে তা বিপদসীমা ছাড়ায় না তা নিয়ে ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা’-র একটি নির্দেশিকা রয়েছে। তা জানার আগে আসুন দেখা যাক, লবন নিয়ে সাম্প্রতিক গবেষণাগুলি ঠিক কতটা সতর্কতার কথা জানাচ্ছে।
চিকিৎসকদের মতে, মাত্রাতিরিক্ত লবনে রক্তচাপ তো বাড়েই, তা ছাড়াও ডেকে আনে আরও নানা অসুখ। আমেরিকান হেলথ অ্যাসোসিয়েশন-এর গবেষকদের দাবি, শরীরে জল ধরে রাখা লবনের বিশেষ বৈশিষ্ট্য। লবনের পরিমাণ বেড়ে গেলে শরীরে অতিরিক্ত জল জমে যায়, এতে ব্রেনস্ট্রোকের ভয় থেকে যায়।
মূত্রের মাধ্যমে বাড়তি লবন শরীর থেকে বার করে। কিন্তু কিডনির কোনও সমস্যা থাকলে সেই বাড়তি লবন শরীর থেকে বেরতে না পেরে মারাত্মক বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। অতিরিক্ত লবনে ক্ষয়ে যেতে থাকে হাড়ের ক্যালসিয়াম। তাই অস্থিসন্ধি ও হাড়ের নানাবিধ অসুখে প্রত্যক্ষ ভাবে লবনের ভূমিকা আছে।
আমেরিকান হেলথ রিসার্চ ইনস্টিটিউট-সহ বিশ্বের বিভিন্ন স্বাস্থ্য গবেষণা সংস্থা এর আগে বহু বার দাবি করেছে, কাঁচা লবন মস্তিষ্কের নিউরোনকেও প্রভাবিত করে। এর প্রভাবে কোলন ক্যানসার ও পাকস্থলীর ক্যানসারের মতো মারণরোগও বাসা বাঁধতে পারে শরীরে। শরীরে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার ক্ষেত্রেও অনেক সময় এই অতিরিক্ত লবন মূল ভূমিকা পালন করে।
লবনের সোডিয়াম যে কেবল কিডনি বা যকৃতের ক্ষতি করে এমনই নয়, ওবেসিটি বা মেদবাহুল্যের জন্যও লবন অনেকটাই দায়ী। হার্টের নানা অসুখ, বিশেষ করে ইস্কিমিয়ায় ভোগেন এমনন মানুষদের জন্য অতিরিক্ত লবন ক্ষতি করে। এ ছাড়াও অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের জন্যও অতিরিক্ত লবন ভালো নয়, এর প্রভাবে রক্তচাপ বৃদ্ধি পায় যা তাঁদের অন্তঃস্থ ভ্রূণের উপর প্রভাব ফেলে।
তাই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, লবনের পরিমাণ যেমন কমে গেলে সমস্যার, তেমনই তা বেড়ে গেলেও শরীরের প্রভূত ক্ষতি। তাই তাদের দেওয়া স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী, প্রতি দিন দু’গ্রাম বা হাফ চা চামচের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখুন লবনের পরিমাণ। এড়িয়ে চলুন কাঁচা লবনও।